এরা বাস করে আমাদের চোখের পাপড়ির গোড়ায়। এখানেই খাওয়া দাওয়া বংশবৃদ্ধি সব করে এরা আর বের হয় না সচরাসর। মাঝে মাঝে আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি তখন আমাদের মুখের ওপরে চলাফেরা করে। এরা হয়ে থাকে ০.৩ মিলিমিটারের মতো লম্বা। বয়স যত বাড়তে থাকে, এদের দ্বারা আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা তত বাড়ে। তাছাড়া আপনার গালের উপর বাস করছে এরা বছরের পর বছর নামী কোম্পানির ক্রিম, ফেসওয়াস, বার বার জল দিয়ে ধোওয়া। মাসে কয়েক বার হয়তো পার্লারে খসে যায় মোটা টাকা। তাতেও কিস্সু লাভ নেই। মানুষের মুখে এদের বসবাস মান সভ্যতার জন্মলগ্ন থেকেই। বংশানুক্রমে। এদের ৪ জোড়া পা। অল্প নড়াচড়া করতে পারে। অনেকটা উকুনের মতো। ঠিক তাই, আপনি যতই মুখ পরিস্কার করুন, এই ধরনের বিদ্ঘুটে পোকার আপনার মুখ থেকে যায় না। মানুষের মুখে এদের বসবাস কয়েক হাজার বছর ধরে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স-এর গবেষকরা সম্প্রতি চিহ্নিত করেছে এই পোকাগুলিকে। ৪ জোড়া পায়ের এই পোকাগুলির নিরাপদ আশ্রয় মানুষের রোমকূপে। পোকাটির বিজ্ঞানসম্মত নাম ডেমোডেক্স ফলিকিউলারাম। বিশেষ করে ব্রন হলে এই পোকাগুলির দৌরাত্ম্য বাড়ে মুখমণ্ডলে। থাকে চোখের পাতাতেও। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মুখে ও শরীরের অন্যান্য জায়গায় এই পোকাগুলি নানা প্রজাতির।


বিশ্বের নানা জায়গার মানুষের মুখ থেকে প্রায় ৭০টি প্রজাতির এই পোকার নমুনা সংগ্রহ করেছেন গবেষকরা। গবেষকদলের প্রধান মাইকেল ট্রউইনের কথায়, 'এই পোকার ৪টি বংশের সন্ধান মিলেছে এখনও। ইউরোপিয়ান, এশিয়ান, আফ্রিকান ও লাতিন আমেরিকান। যুগ যুগ ধরে মানুষের মুখে এই পোকার বসবাস। বলা যায়, মানব সভ্যতার নানা বিবর্তনের সাক্ষী।' এদের মধ্যে সবচেয়ে পুরনো হল আফ্রিকান ও এশিয়ান বংশোদ্ভূতরা। অতএব মুখে যতই ফেসিয়াল করান, এই পোকারা কিলবিল করে স্বমহিমায়। এদের ফেস মাইট বলে। এরা ত্বক ও ঘাম খায়। এরা কোনো ক্ষতি করে বলে এখনো জানা যায়নি। এদের পাচন তন্ত্রে নাকি পায়ুছিদ্র নেই।

Post a Comment

Previous Post Next Post
You have to wait 15 seconds.